যুগপৎ আন্দোলনেই সরকারের পতন ঘটানো হবে, বললেন খসরু

মানুষ এখন বুঝতে পারছে, রাস্তায় নেমে সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া মুক্তির কোনো পথ নেই উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর পল্টনের প্রীতম জামান টাওয়ারে আয়োজিত গণঅধিকার পরিষদের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই সরকারের পতন ঘটানো হবে। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, যে যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা হয়েছে, যার যার অবস্থান থেকে আগামী দিনগুলোতে রাস্তায় থেকে ফ্যাসিস্টের পতন ঘটাতে ত্বরান্বিত করতে পারবেন বলে আশা করি। যারা এখানে উপস্থিত হয়েছেন সকলেই তাদের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না।বাংলাদেশের মানুষ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আজকে এই প্রেক্ষাপটে কারা জনগণের পক্ষে অবস্থান করছে আর কারা ফ্যাসিস্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আগামী নির্বাচনে গিয়ে জাতির বিরুদ্ধাচরণ করছে তা জাতি পর্যবেক্ষণ করছে।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী

গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির জনসভায় এতো বাঁধা-বিপত্তির পরেও মানুষ সেখানে আসছে কেন জানেন? আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাবো না। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাবো, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। জনগণ তাদের প্রতিনিধি ও সরকার গঠন করবে।

যারা এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন তাদের উদ্দেশে খসরু বলেন, উচ্ছিষ্টভোজী হবে না। আগামী নির্বাচন রাজনীতিবিদদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া নির্ভর করছে। এই পরীক্ষায় রাজনীতিবিদদের উত্তীর্ণ হতে হলে জনগণের পক্ষে পরিষ্কার অবস্থান নিতে হবে।

এ সময় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমাদের সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে আমরা যে চেতনায়, মানসিকতায়, ইচ্ছায় পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম, তার তেমন কিছুই বাস্তবায়িত হয় নাই। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র নিরাপদ হবে, পাকিস্তানের বাইশ ধনী পরিবারের হাত থেকে আমরা মুক্তি পাবো, কিন্তু এর কিছুই আমরা পাই নাই।

অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এমন একটা সরকার ক্ষমতায় রয়েছে যারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। যারা প্রকাশ্যে ভোট চুরিকে জায়েজ করতে চেষ্টা করে। কখন মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান দিয়ে, কখনো প্রোগৈতিশীলতার স্লোগান দিয়ে, কখনো উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দবস্তে যেতে হবে। নতুন রাজনৈতিক বন্দবস্ত হচ্ছে একটু গণতান্ত্রিক বন্দবস্ত। যেখানে নাগরিক অধিকার থাকবে। কোনো শাসক ক্ষমতা দিয়ে সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে না।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, নুরুল হক নূর ছাড়াও মেজর (অব.) জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *