ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) নিয়ে নানা সমালোচনার কারণে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে নিয়ম কিংবা আইনের সংশোধন আনার কথা ইঙ্গিত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও-এ ‘শেপিং অব থার্ড সেক্টর-ল অ্যান্ড পলিসিস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
আইন সংশোধনের জন্য নাগরিক সমাজ কর্তৃক প্রস্তাব উপস্থাপন উপলক্ষে ইউএসএইড, ইন্টারন্যাশনাল-সেন্টার-ফর-নট-ফর-প্রফিট ল (আইসিএনএল) ও কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন-২০১৬ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর বেশ কয়েকটি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলেছেন এটার (ডিএসএ) কোনো উপকারিতা নেই। আমার মনে হয় কিছু কিছু উপকারিতা তো এই অ্যাক্টে রয়েছে। আামি এমন কথা বলব না এই আইনটার ত্রুটি বিচ্যুতি নেই। সব আইনেরই কিছু কিছু সিস্টেমিক প্রবলেম আছে, কিছু বাস্তবায়নে সমস্যা আছে। তখন আইনটা টেবিলে আসে, এই বাস্তবায়নে যে সমস্যা আছে সেগুলো কীভাবে রিসলভ করা যায় সেগুলো দেখা হয়। ঠিক সে কারণেই এই আইনটা নিয়ে আমি আবারো বসব। যদি নিয়মের (রুলস) পরিবর্তন করে এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারি অবশ্যই সেদিকে আমরা যাব। যদি তারপরেও আমরা দেখি রুলস না আইনটাকে কিছু পরিবর্তন কিংবা সংশোধন করার প্রয়োজন আছে, আমরা কিন্তু সেটা করতে উদ্যোগ নেব।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় না যদি ঢালাওভাবে বলি আইনটাকে বাতিল করে দাও, সেটা যুক্তিসঙ্গত কারণ হবে না। আসুন আমরা বসি। আপনারা চাইলে সেটা রমজানের আগে হতে পারে বা পরেও হতে পারে। তবে রমজানের আগে হলে ভালো, সংসদের বাজেট অধিবেশনের আগে সেটি উত্থাপন করতে পারব।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সামনে আইনটা আছে, রুলস আছে এবং আইনের কোথায় কেথায় অপব্যবহার হয়েছে সেটি আছে। আমরা আলাপের মাধ্যমে এই আইনটাকে আরও সমস্যা দূরীকরণ করতে চাই। যাতে এ আইন প্রণয়নের আসল উদ্দেশ্যের সহায়ক হয়। আমাদের সরকার যুক্তিসঙ্গত কথা শোনতে চায়। নাগরিক সমাজের কথা বলা বন্ধ করা সরকারের উদ্দেশ্য নেই।
ডিএসএ আইন করার উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি বলেন, আপনারা যে রকম এদেশের নাগরিক, আমরাও সে রকম এদেশের নাগরিক। আপনাদের যে রকম সংবিধানের প্রতি আনুগত্য আছে, আমাদেরও সে রকম আনুগত্য আছে। আমরা চাই না সংবিধান বিরোধী কোনো আইন হোক। এই আইন কারো বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য করা হয়নি। পেনাল কোডে সরাসরি চুরির শাস্তি আছে। এখন দেখা যাচ্ছে প্রযুক্তির বিস্তারে চুরি এখন ফিজিক্যালি করতে হয় না। এটা করা হয়েছিল ডিজিটাইজেশন-অগ্রগতির কারণে যে অপরাধ করা যাচ্ছিল সেটাকে আইনের মাধ্যমে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া দরকার ছিল।